সুরা আল-ইসরা (১৭ নং সুরা) অর্থ সহ পড়ছিলাম । প্রথম আয়াত পড়েই থমকে গেলাম -“পরম পবিত্র ও মহিমাময় সত্তা তিনি, যিনি স্বীয় বান্দাকে রাত্রি বেলায় ভ্রমণ করিয়েছিলেন মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত-যার চার দিকে আমি পর্যাপ্ত বরকত দান করেছি যাতে আমি তাঁকে কুদরতের কিছু নিদর্শন দেখিয়ে দেই।”
এই আয়াতের ব্যাখ্যা পড়তে গিয়ে আমি বিস্ময়ে বারবার চমকে উঠেছি । রাতের প্রার্থনা সেরে মুহাম্মদ (সা:) ঘুমাতে যান । তারপর জিব্রাইল (আ:) তাকে ডেকে তুলেন এবং রাসুল (সা:) বোরাকের পিঠে করে ১ম থেকে ৭ম আসমান পরিভ্রমণ করেন । পূর্ববর্তী অনেক নবী রাসুলের সঙ্গে তার সাক্ষাত ঘটে এবং ঊর্ধ্বাকাশে সিদরাতুল মুনতাহায় তিনি মহান আল্লাহ'র সাক্ষাৎ লাভ করেন । তাঁকে বেহেশত এবং দোযখ দেখানো হয় । আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে যতটা বুঝি তাতে তাকে অতীত এবং ভবিষ্যত দেখানো হয় । এবং পরিশেষে তিনি ভোর হবার আগেই ফেরত আসেন এবং এসে সবাইকে ঘুম থেকে ডেকে তুলেন এবং ফজরের নামাজ আদায় করেন ।
তিনি যখন এই ঘটনার বর্ণনা করেছিলেন, অনেক অবিশ্বাসী তা বিশ্বাস করেনি । তারা সন্দেহ করেছিল কিভাবে এত অল্প সময়ে সাত আসমান পরিভ্রমণ সম্ভব ?
অথচ এখন , এই ঘটনার প্রায় ১৪০০ বছর পর এসে বিজ্ঞান বলছে টাইম ট্রাভেলের কথা । টাইম মেশিনে চড়ে অতীত কিংবা ভবিষ্যতে যাওয়া যাবে এমন মত অনেক বড় বড় বিজ্ঞানীদের ।
আপেক্ষিকতা অনুসারে কোনো বস্তু যখন আলোর গতিতে চলবে তখন তা হয়ে যাবে ভরশূন্য। আর যদি আলোর গতিতে চলা যায় তবে সময় স্থির হবে, মানে টাইম ট্রাভেল হবে। তার মানে আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতা অনুযায়ী তাত্ত্বিকভাবে সময় ভ্রমণ সম্ভব ।
পদার্থ বিজ্ঞানী রোনাল্ড ম্যাল একটি বলয় লেসারের সাহায্যে সময় ভ্রমণকে বাস্তবায়িত করার নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সায়েন্স ফিকশন তো বহুভাবেই তা দেখাচ্ছে , কখনো অতীতে যাচ্ছে কখনো ভবিষ্যতে, গল্পে কিংবা রুপালী পর্দায় ।
এমন যদি হয় যে আপনাকে আলোর গতিতে ছুটে চলতে পারে এমন কোনো একটি মহাকাশযানে উঠিয়ে দেয়া হল এবং আপনি ভ্রমণে বেরিয়ে পড়লেন মহাজগতের এপার থেকে ওপারে । আপনি পৃথিবীতে এসে দেখবেন অনেক বছর সময় কেটে গেছে যেখানে আপনার কাছে মনে হবে মাত্র অল্প কিছু সময় ।
মহানবী (সা:) বোরাক নামক যে বাহনে অারোহন করেছিলেন তা আলোর অধিক বেগে ছুটেছিল উর্ধাকাশে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই । তবে পৃথিবীর সময়টা হয়ত স্থির করে রাখা হয়েছিল, মহান আল্লাহ ইচ্ছায় তো সবই সম্ভব ।
সুরা কাহাফের বর্ণনায়, আল্লাহ যেমন কয়েকজন যুবককে তিনশত বছর গুহায় ঘুম পাড়িয়ে রেখেছিলেন আর তারা জেগে ভেবেছিল যে তারা সকালে ঘুমিয়েছে আর বিকালে ঘুম থেকে জেগেছে ।
এখানেও তো নির্দশন আছে বিশ্বাসীদের জন্য । আল্লাহ ওই যুবকদের সময়কে স্থির করে দিয়েছিলেন হয়তবা আর পৃথিবীর সময় চলছিল তখন আপন গতিতে । “কুন ফায়া কুনের” মালিকের জন্য এ তো মামুলি এক বিষয় ।
বিজ্ঞান বুঝি বড্ড পুরাতন !
বিজ্ঞান এখন যা বলছে তা অনেকটা টাইম মেশিনে চড়ে ১৪০০ বছর পেছনে যাওয়ার মতোই ঘটনা । অবশ্য এই ধারণা কেবল বিশ্বাসীদের জন্যই !বিজ্ঞান বুঝি বড্ড পুরাতন !
-তানভীর শাহরিয়ার রিমন
ক্বোরআন ও বিজ্ঞানের ভিতর কোন বিরোধ নেই যদি আমরা তা বুঝতে সক্ষম হই। অথচ আমরা যারা একটু বিজ্ঞান মনস্ক তারা ক্বোরআনকে অস্বীকার করতে চাই। আমরা যারা ক্বোরআনকে অস্বীকার করতে চাই তাদের ভুল ভাঙ্গাতে এই ক্ষুদ্র লেখাটি সহায়ক হতে পারে। স্যার আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এমন একটি যুগোপযোগী লেখা উপহার দেওয়ার জন্য।
ReplyDeleteআসলেই বিজ্ঞান বোধহয় বড্ড সেকেলে। আর ১৪০০ বছরের পুরনো কুরআন থেকেই বিজ্ঞানের নানান সমস্যার সমাধান হয়েছে, হচ্ছে এবং হবে ইন শা আল্লাহ। যেখানে বিজ্ঞানের পদচারণা শেষ সেখান থেকে কুরআনের শুরু।
ReplyDelete